আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

যারা বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করে তারাও সুফল ভোগ করছে: মন্ত্রী গাজী

নবকুমার:
স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত নারায়ণগঞ্জ -১ ( রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের ডাকদিয়েছেন বলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আমরা সবাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। স্বাধীনতা বিরোধীরা ২১ টি বছর বাংলাদেশ শাসন করেছে। সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে তাদের ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করেছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা বলতে পারিনি আমরা মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধা বললে পারেই আমাদের উপর মামলা হামলা করা হতো। নানা নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা ছেলে মেয়েদের ভালো করে লেখা পড়া করাতে পারিনি। কারণ আমরা মামলা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়ছি । বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ টি বছর আমরা মুক্তিযোদ্ধারা খেতে পারি নাই , অনেক অত্যাচারিত হয়েছি।
তিনি বলেন, সবচেয়ে ভালো কাজ আমরা মুক্তিযোদ্ধারা করেছি। তারপরও আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা না আসলে আমাদের উপর সেই জুলুম-অত্যাচার চলতো। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশের হাল ধরে দেশকে উন্নত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধারা সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন , আমরা মুক্তিযোদ্ধারা প্রত্যক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। সাধারণ জনগণ পরোক্ষভাবে যুদ্ধ করেছে। বঙ্গবন্ধু সমস্ত বাঙালিকে একত্রিত করেছিলেন। প্রতিটি লোক মুক্তিযোদ্ধাদের সমর্থন করেছেন। জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদের সমর্থন না করলে আমরা গ্রামে-গঞ্জে যুদ্ধ করতে পারতাম না।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবদানে আমরা বিলাবহুল জীবনযাপন করতে পারছি। যারা পাকিস্থান আমলে ছিলেন তারা জানেন বাঙালিদের উপর শোষণ নির্যাতনের কথা। তখন বাঙালিদের গাড়ি ছিলো না। আজ এতো গাড়ি হয়েছে যে রাস্তায় যানজট লাগে। সবার মনে করতে হবে বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ মানে বঙ্গবন্ধু। স্বাধীনতার সুফল আমরা সবাই ভোগ করছি। যারা বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করে তারাও স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে।
বুধবার ( ১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদে পুরস্কার বিতরণ , দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি সকল শহীদদের স্মরণে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার আত্মার মাগফেরা কামনা করেছেন তিনি ।
মন্ত্রী বলেন, আমরা সবচেয়ে বেশি স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধুকে। বঙ্গবন্ধু এমনভাবে আমাদেরকে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন আমরা তার ডাকে সারাদিয়ে মুক্তযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স হয়ে গেছে। আমরা এক সময় থাকব না। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধুর অবদান জানাতে হবে। এটা সবার নৈতিক দায়িত্ব।

তিনি বলেন, যুবকদের দায়িত্ব যখন বিপদ আসবে তখন রুখে দাঁড়াবে। আমরা যখন যুবক ছিলাম তখন মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি।
মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন গ্রুপ ছিলো। আমি ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য ছিলাম। আমরা গেরিলা যুদ্ধ করেছি। আমরা ভারত থেকে ট্রেনিং দিয়ে এসে যুদ্ধ করেছি। আমরা ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্যরা ঢাকায় থেকে রূপগঞ্জে এসে যুদ্ধ করেছি। আবার রূপগঞ্জ থেকে ঢাকায় গিয়ে যুদ্ধ করেছি। ভারত সরকার আমাদের খাদ্য ,বস্ত্র , অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছে। তখন জীবনের নিরাপত্তা ছিলো না। প্রতিটি মা তার সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার আগে দোয়া করে দিয়েছেন। বলেছেন আমার ছেলে যেনো আবার ফিরে আসা।
এসময় রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহজাহান ভুঁইয়া, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহান, সহকারী কমিশনার ( ভূমি) আফিফা খাঁন, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল আহমেদ , মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা, রূপগঞ্জ থানার ওসি মাহমুদুল হাসান, রূপগঞ্জ উপজেলার সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আমান উল্লাহসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, যুবলীগ , স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া রূপগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।